মস্তিষ্কে ধারণকৃত তথ্যকে স্মৃতি বলে। এই প্রক্রিয়ার প্রথমে তথ্য আহরিত হয় মস্তিষ্কের মধ্যে জমা হয় তারপর যেখানে যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানে সেখানে সেই তথ্য বের করে কাজে লাগানো যায়। যদি কারো জমাকৃত তথ্য সঠিক সময়ে খুঁজে পাওয়া না যায় তার স্মৃতিশক্তি কম।
পূর্বের জমাকৃত ঘটনাগুলো যে যত বেশি স্মরণ রাখতে পারবে তার স্মৃতি শক্তি ততবেশি। বয়সের ভার বেশি হলে মাথার মস্তিষ্ক কম কাজ করে। মাথার মধ্যে আছে নিউরন কোন কারণে এই নিউরন আক্রান্ত হলে মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। মস্তিষ্কের মধ্যে এই নিউরনের কাজ হল শরীর এবং মনের যা কিছু ঘটছে তার হিসাব রাখা। তাই নিউরনের কোন সমস্যা হলে স্মৃতি শক্তির উপর তার অনেকটা প্রভাব পড়ে।
স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার কারণ গুলো
- বয়স বৃদ্ধি
- আঘাতপ্রাপ্ত
- মানসিক অস্থিরতা
- ইমোশনাল আঘাত
- রাগ
- অর্থ সামাজিক সমস্যা
- অপর্যাপ্ত ঘুম
- বেশি নেশা করা
- অনৈতিকতা
বয়স বৃদ্ধি
মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথেই নিউরন ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে তার ফলস্বরূপ স্মৃতিশক্তি কম থাকে।
আঘাতপ্রাপ্ত
মাথায় আঘাত বা চোট পেলে বা কোন বিষক্রিয়ার কারণে নার্ভ সেলগুলো অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না তার ফলে ধীরে ধীরে আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে।
মানসিক অস্থিরতা
মানসিক অস্থিরতা বা মানসিক চাপ মস্তিষ্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মানসিক চাপ আমাদেরকে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং রক্তে করোটিসলের লেভেল বাড়িয়ে হিপ্রো ক্যাম্পাসের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় যেখানে শর্ট টার্ম মেমোরি থাকে।
ইমোশনাল আঘাত
ইমোশনাল আঘাত সাধারণত আত্মীয়-স্বজন অথবা ভালোবাসার মানুষ যদি ধোকা দেয় তাহলে অনেক সময় মস্তিষ্ক তার প্রভাব পড়ে। বেশি ডিপ্রেশনে থাকার কারণে মস্তিষ্কের বিরাট ক্ষতি হতে পারে।
রাগ
রাগ, ক্ষোভ, গুস্সা এগুলো মানুষের মস্তিষ্কের জন্য খুবই ভয়ানক। রাগ, ক্ষোভ, গুসসা অল্প সময়ের জন্য মানুষের ব্রেইন কে স্থবির করে দেয় যা স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।
অর্থ সামাজিক সমস্যা
পেশাগত হয়রানি, অর্থনৈতিক দুর্বলতা, সামাজিক বদ প্রভাব ইত্যাদির কারণেও মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অপর্যাপ্ত ঘুম
ভালো ঘুম মস্তিষ্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে। কারণ ঘুমের যেই সময়টা মধ্যেই মস্তিষ্কতে যত তথ্য আছে সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে। তাই ঘুম কে বলা হয় মেমোরি চার্জার।
বেশি নেশা করা
অতিরিক্ত নেশার কারণে মস্তিষ্ক থেকে খুব বাজে প্রভাব পড়ে। নিয়মিত নেশার কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একটি গবেষণায় জানা গেছে যে যারা 15 থেকে 20 বছর টানা অ্যালকোহল সেবন করছে তাদের জীবনের শেষের দিকে স্মৃতি হারানো সম্ভাবনা বেশি দেখা দেয়।
অনৈতিকতা
ক্রমাগত অনৈতিকতা অশ্লীলতা চর্চা করার ফলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। যা পরবর্তীতে মানুষের স্মৃতিশক্তিকে গ্রাস করে নেয়। স্মৃতিশক্তি রক্ষায় আমাদের সৎ সচেতনতা আর কোনো জুড়ি নেই।
Note. সর্বশেষে বলতে চাচ্ছি যে, সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে যতটুকু স্মৃতিশক্তি দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তার থেকে বেশি স্মৃতিশক্তি তৈরি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং আমাদেরকে যতটুকু স্মৃতিশক্তি দেওয়া হয়েছে আমরা তার ভাল এবং সঠিক ব্যবহার করি তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ সুবহান আল্লাহ তাআলা এর বদলা একদিন অবশ্যই দিবেন।