এখানে প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি জানি মানসিকভাবে শক্তিশালী কে?
যে কঠিন পরিশ্রমী, যে তারা আবেগ কে পরিচালনা করতে পারে, যে সর্বদা আনন্দের পিছনে ছুটি থাকে, যে সর্বদা সাকসেস অর্জন করে, যে তার শরীরকে যন্ত্রের মত পরিচালনা করতে পারে নাকি যে নিজেকে সবসময় স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে। না ভাই এগুলো কখনোই নির্ধারণ করে না যে আপনি কতটা মানসিকভাবে শক্তিশালী।
চলুন দেখে নেয়া যাক, কি কি উপায় আপনিও চাইলে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে পারবেন। তাহলে চলুন পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পুরোটা ভালোভাবে পড়া যাক।
মানব শরীরে জীন রয়েছে অথবা বংশগত ধারা রয়েছে সেইগুলো আমাদেরকে মেন্টাল হেলথ অর্থাৎ মুড, আচার-আচরণ ইত্যাদি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। তারপর পার্সোনালিটিতে আসুন, কিছু মানুষ রয়েছে যারা ছোটবেলা থেকেই গম্ভীর বাস্তব চিন্তা ভাবনা করে। আবার কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা কল্পনাবিলাসী এই ব্যক্তিত্বের ধারাগুলো কোন একজন মানসিক ভাবে শক্তিশালীকিনা তা অনেকটাই নির্ধারণ করে। আর একটু ভেবে দেখুন এক্সপেরিয়েন্স অর্থাৎ অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনের অতীত অভিজ্ঞতাগুলি কিন্তু বর্তমান চিন্তাভাবনা আচার-আচরণ অন্য মানুষ সম্পর্কে ধারণা এবং এই বিশ্বকে অনুভব করার ক্ষমতা কি অবশ্যই খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং আমরা মানসিকভাবে শক্তিশালী কিনা এটা নির্ভর করে প্রধানত আমাদের থট (চিন্তাভাবনা), আচার-আচরণ, ইমোশনালি আমরা কেমন এগুলোর ওপর।
চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি উপায়ে মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়া যায়
- পূর্বে কোন কাজের জন্য অনুতাপ করে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। পূর্বের কোন কাজে যত বড়ই ভুল হোক না কেন তাতে একদমই অনুতাপ ও সময় নষ্ট করা উচিত নয়। যারা মেন্টালি স্ট্রং তারা কখনোই পূর্বের কোন কাজের জন্য অনুতাপ করে না। বরং পূর্বের কোন কাজ যদি তাদের ধরা ভুল হয়ে থাকে তার থেকে শিক্ষা নেয় যাতে করে পরবর্তীতে এমন ভুল আর কখনোই না হয়।
- যারা মানসিকভাবে শক্তিশালী হয় তারা পরিবর্তনকে সানন্দে গ্রহণ করে। কারণ আমাদের এই অল্প সময়ে জিন্দেগীতে একমাত্র চিরস্থায়ী সত্য হলো পরিবর্তন। যে জীবনের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে না সেই জীবনের প্রবাহ থেকে ছিটকে পড়ে। সে কখনোই মেন্টালি স্ট্রং হতে পারে না। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যা ব্যবহার করি যেমন মোবাইল, কিছুদিন পরপরই আপডেট হয় আর আমরা আপডেটাই ব্যবহার করি। যদি একটি নির্দিষ্ট কোম্পানি মোবাইল আপডেট না দিত তাহলে অন্য একটি মোবাইল কোম্পানি আপডেট দিয়ে তার জায়গাটি দখল করে নিত। সুতরাং মানুষকে সময়ের সাথে বদলাতে হবে নয়তো যেই সেই থেকে যাবে।
- যারা মানসিকভাবে শক্তিশালী তারা কখনোই সেই সব বিষয়ের উপর ফোকাস করেনা যা তার নিয়ন্ত্রণে নেই। যারা দুর্বল মেন্টালিটির মানুষ হয়ে থাকে তারা অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। কিন্তু যারা স্ট্রং মেন্টালিটির তারা নিজে যতটুকু পারো ততটুকুই উপরে নির্ভরশীল থাকে এবং এর মধ্যেই তারা কামিয়াবীর পতাকা ধরতে পারে। সুতরাং কখনোই নিজের কাছে নেই এমন কোনো কিছুকে আঁকড়ে ধরা যাবেনা। নিজের কাছে যা আছে তা দিয়েই শুরু করতে হবে।
আমরা কখনোই সবার মন জুগিয়ে কাজ করতে পারবোনা। যে সবার মন জুগিয়ে কাজ করতে চায় সে কখনোই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেনা। যে সবাইকে খুশি করতে চায় সে আসলে কাউকে খুশি করতে পারে না। তাই যাদের মেন্টালিটি স্ট্রং তারা নিজের ভালোবাসার দিকে লক্ষ্য স্থির করে চলে সততার ওপরে চলে। তারা তাদের নিজের মূল্য কে মাথায় রেখে কাজ করতে ভালোবাসো। চলুন আজকে আমরা সবাই জায়গা এবং পরিস্থিতি বুঝে বিনয়ের সাথে ‘না’ বলতে শিখুন। কোথায় কখন কাকে ‘হ্যা’ বলতে হবে তাও জানতে হবে আবার কোথায় কখন কাকে ‘না’ বলতে হবে তাও জানতে হবে।
- এই পর্যন্ত যত মানুষ সাকসেসফুল হয়েছে তারা সবাই ঝুঁকি নিয়েছেন। ঝুঁকি ছাড়া সাকসেসফুল হওয়ার সম্ভাবনা। তাই ঝুঁকি নেয়ার আগে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করে হিসাব-নিকাশ ভালোভাবে কষিয়ে তারপরে ঝুঁকি নিন যাতে করে আপনার সফলতার চান্স বেশি থাকে। যারা মেন্টালি স্ট্রং থাকে তারা ঝুঁকি নেওয়ার পর কখনো পিছপা হয়না। কারণ তারা তাদের কথার উপরে অটুট থাকে।
উপরের লিখিত বিষয়গুলো ভালভাবে বুঝতে এবং শিখতে পারলে আপনি মেন্টালি স্ট্রং অথবা মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে পারবেন।