মানুষ তার মস্তিষ্কের দিয়ে সারা দিন অনেক চিন্তা ভাবনা করে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। কিন্তু আমরা কি জানি আমরা যে প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি এই চিন্তাভাবনাগুলো মস্তিষ্কের কোন কোন অংশ থেকে আসে?
মস্তিষ্ক
সুষুস্নাকান্ডের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ করোটিকার মধ্যে অবস্থান করে তাকে মস্তিষ্ক বলে।
মস্তিষ্কের তিনটি অংশ :-
- অগ্রমস্তিষ্ক
- মধ্য মস্তিষ্ক
- পশ্চাৎ মস্তিষ্ক
অগ্রমস্তিষ্ক

মস্তিষ্কের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশকে অগ্রমস্তিষ্ক বলা হয় অথবা সেরিব্রাম বলা হয়। অগ্র মস্তিষ্কের ডান ও বাম অংশ দুটি সম্পূর্ণ ভাবে বিভক্ত কারণ দুটি অংশের মাঝখানে বিভেদক অফ থাকায় এই ভিত্তি ঘটে। এদের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। সেরিব্রাম এর ডান ও বাম অংশ দুটি একগুচ্ছ নিউরন দিয়ে সংযুক্ত থাকে, একে কার্পাস ক্যালোসাম বলে। বাম সেরিব্রাম হেমিস্ফিয়ার দেহর ডান অংশ এবং ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার দেহের বাম অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অগ্র মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ :-
- সেরিব্রাম
- থ্যালামাস
- হাইপোথ্যালামাস
সেরিব্রাম এর কাজ
- চিন্তা বুদ্ধি ইচ্ছাশক্তি উদ্ভাবনী শক্তি প্রভূতি উন্নয়ন মানসিক বোধর নিয়ন্ত্রণ।
- বাকশক্তি নিয়ন্ত্রণ
- সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ।
- ঐচ্ছিক পেশির কার্যকালাপ নিয়ন্ত্রণ।
থ্যালামাস এর কাজ
- সংঙাবহ স্নায়ুর রিলের স্টেশন হিসেবে কাজ করে।
- চাপ যন্ত্রণা স্পর্শ প্রভূতির কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- আবেগ ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
- ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তোলে।
- মানুষের ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণের প্রকাশ ঘটায়।
- পরিবেশ সম্পর্কে সতর্ক করে তোলে।
হাইপোথ্যালামাস এর কাজ
- দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ক্ষুধা তৃষ্ণা ঘাম ঘুম রাগ ঘৃণা উদ্যোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
মধ্য মস্তিষ্ক

পশ্চাৎ মস্তিষ্কের উপরের অংশ হলো মধ্য মস্তিষ্ক। মধ্য মস্তিষ্কের পিছনে অবস্থিত নলাকৃতি বৃহৎ অংশের নাম পর্নস। এটি অগ্র ও পশ্চাৎ মস্তিষ্কের মধ্যে যোগসূত্র রচনা করে।
মধ্য মস্তিষ্কের কাজ
- দর্শন ও শ্রবণ তথ্যের সমন্বয় ঘটায় এবং প্রতিবেদন তৈরি করে।
- বিভিন্ন পেশার কাজের সমন্বয় সাধন ও ভারসাম্য রক্ষা করে।
পশ্চাৎ মস্তিষ্ক

পশ্চাৎ মস্তিষ্ক মূলত দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে।
পশ্চাৎ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ :-
- সেরেবেলাম
- মেডুলা অবলঙ্গাটা
- পনস
সেরেবেলাম এর কাজ
- ঐচ্ছিক চলাফেরার নিয়ন্ত্রণ করে।
- ঐচ্ছিক পেশীটান নিয়ন্ত্রণ করে।
- দেহের ভারসাম্য ও দেহভঙ্গি বজায় রাখে।
- চলাফেরার দিক নির্ধারণ করে।
মেডুলা অবলঙ্গাটা এর কাজ
- হৃদস্পন্দন শ্বসন কাশি রক্তনালী সংকোচন লালা ক্ষরণ প্রভূতি স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- বমন মলমূত্র ত্যাগ রক্তচাপ পৌষ্টিক নালীর পেরিস্ট্যালসিস প্রভূতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পনস এর কাজ
- দেহের দু’পাশের পেশীর কর্মকাণ্ডের সমন্বয় করে।
- স্বাভাবিক শ্বাসক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রণ করে।