আপনি কি স্টুডেন্ট? পড়ার পাশা পাশি কিছু ইনকাম করতে চাচ্ছেন? “অনলাইন বিজনেস” যাতে করে আপনার খরচের জন্য বার বার ঘরের থেকে হাতখরচ নিতে না হয়। নয়তো আপনি আপনার পরিবারকে ফাইনান্সিয়াল সাহায্য করতে চান? নাকি আপনি চাকরি করছেন কিন্তু সেই টাকা দিয়ে আপনার হচ্ছে না। নাকি আপনি অনেক ভালো পড়াশোনা করেছেন কিন্তু আপনি জব পাচ্ছেন না? তো এই পোস্ট শুধু আপনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে যাতে করে আপনি আপনার ফ্রি টাইমে মোবাইল অথবা ল্যাপটপ দ্বারা এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে কিভাবে অনলাইন বিজনেস থেকে ইনকাম করা যায়।
অনেকেই বলে যে আমি রাত দিন পরিশ্রম করতে রাজি আছি কিন্তু আমি এমন কোন রাস্তা পারছিনা যেখান থেকে আমি টাকা ইনকাম করতে পারব।
আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে যা আলোচনা করা হবে তার মধ্যে কোন ধরনের কোন ফাঁকিবাজ এর কোন কিছু নেই সব প্র্যাক্টিকাল আপনাদের সামনেই রয়েছে। এই পোস্টের মধ্যে আমি একদমই কোন কোম্পানি অথবা কোন ওয়েবসাইটের প্রমোশন করছি না। যে পদ্ধতি গুলো এখানে বলা হবে তা সবই সত্য। এই পদ্ধতিগুলো সাথে সাথে আপনাকে এটাও বলা হবে যে আপনি কিভাবে বেশি থেকে বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। দয়া করে এই পোষ্টের সমস্ত পড়া গুলো ভালো ভাবে মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং বুঝার চেষ্টা করবেন। যদি একবার পড়ে না বোঝেন তাহলে বারবার পড়বেন।
টাকা কামানোর দুইটি পদ্ধতি
- অ্যাক্টিভ ইনকাম
- প্যাসিভ ইনকাম
অ্যাক্টিভ ইনকাম

অ্যাক্টিভ ইনকাম হলো, আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত কাজ করছেন ঠিক ততক্ষন পর্যন্ত আপনার কাছে টাকা আসবে।
উদাহরন :- কোন লেভার কোথাও কাজ করে, এর মধ্যে যদি সে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে কি তার টাকা আসবে? অবশ্যই আসবে না। এটার মানে হল কাজ বন্ধ তো টাকা আসাও বন্ধ। কিন্তু বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ মানুষই অ্যাক্টিভ ইনকাম এর পিছনে দৌড়াচ্ছে।
একটি ইনকাম এর পজিটিভ সাইট হচ্ছে, আপনি যত ফিজিক্যাল কাজ করবেন ততো শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন এটা হচ্ছে একটা প্লাস পয়েন্ট।
কিন্তু যেদিন আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন অথবা আল্লাহ না করুক আপনি কোন একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হলেন তখন তো আপনার ইনকাম টা শেষ হয়ে গেল এটা হচ্ছে অ্যাক্টিভ ইনকামের সবথেকে বড় নেগেটিভ সাইট।
প্যাসিভ ইনকাম

এখানে প্যাসিভ ইনকাম এর একটি উদাহরণ দেয়া যাক। ধরে নিন, কোন মানুষ অনেক মেহনত করে টাকা-পয়সার জমিয়ে ওই টাকা দিয়ে কয়েক তলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং তৈরি করল আর সেটাকে ভাড়ায় দিয়ে দিল। এখন যদি সে দশ দিন ও অসুস্থ থাকে তাহলেকি তার ইনকাম কম হবে? অবশ্যই কম হবে না। এটাই হলো প্যাসিভ ইনকাম এর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
এটার মানে হচ্ছে, প্রথমে মানুষটি অ্যাক্টিভ কাজ করতেছিল। তারপর অ্যাক্টিভ ইনকামটিকে প্যাসিভ ইনকাম পরিবর্তন করল। এখন প্যাসিভ ইনকাম এর নেগেটিভ পয়েন্ট হল, এর সব থেকে বড় নেগেটিভ পয়েন্ট হল আপনি চাইলে সরাসরি প্যাসিভ ইনকাম চালু করতে পারবেন না। কেননা প্যাসিভ ইনকাম এর জন্য আপনাকে প্রথমে অ্যাক্টিভ কাজ করতেই হবে।
যেই লোক বাড়ি করে বাড়ি ভাড়া দিয়েছে সে কোন না কোন দিন তো অ্যাক্টিভ কাজ করেছে। প্যাসিভ ইনকামের আয় খুব ধীরে হয় কিন্তু যখন ভালোভাবে শুরু হয়ে যায় তখন হতেই থাকে। প্যাসিভ ইনকাম এর একটি ভালো দিক হচ্ছে, আপনাকে চিন্তা করতে হবে না আগামী মাসে আমাকে কাজ করতে হবে নাকি হবে না।
চলুন দেখে নেয়া যাক অনলাইন বিজনেস এর মাধ্যমে আপনি কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে

ফ্রিল্যান্সিং, এর মানে হচ্ছে টাকা নিয়ে অন্য কারো অথবা কোন কাস্টমারকে সার্ভিস দেওয়া। আর এরকম অনেক অনলাইন সার্ভিস আছে যা আপনি ঘরে বসে দিতে পারেন।
আপনি হয়তো বা চিন্তা করছেন কি সার্ভিস দিব?
ধরেন, আপনার ফটো এডিটিং এর অনেক শখ। আপনি ফটো এডিটিং খুব ভালোভাবে পারেন। তখন আপনি চাইলে আপনার এই কাজটাকে ইনকাম এ পরিণত করতে পারেন। যে কোন কোম্পানির লোগো বানাতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেলের লোগো বানাতে পারেন। কোন ফেসবুক পেজের লোগো বানাতে পারেন। কোন ফেমাস ইনস্টাগ্রামের চ্যানেলের সাথে কথা বলে তাদের ফটো এডিটিং এর কাজ করে দিতে পারেন। এটার মানে হচ্ছে যত ধরনের ফটো এডিটিং এর মত অনলাইন বিজনেস কাজ আছে আপনি চাইলে ঘরে বসে বসে খুব সহজেই অন্যকে টাকার বিনিময়ে তা করে দিতে পারেন।
এটাতো গেল মাত্র একটি অপশন, অনলাইনে এরকম আরো হাজারো অপশন রয়েছে যা দ্বারা আপনি ঘরে বসে খুব সহজে ইনকাম করতে পারেন হাজার হাজার টাকা।
যেমন :- গ্রাফিক্স ডিজাইন, কন্টেন ক্রিয়েটর, টাইপিং, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট পাওয়া যায়। সেই ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে আপনি মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করে নিজের একাউন্ট খুলে খুব সহজেই ইনকাম করতে পারেন।
নিচে দুটি ওয়েবসাইটের লিংক সহ দেওয়া হল:
এই দুটি ওয়েবসাইটের মধ্যে আপনি অ্যাকাউন্ট খুব সহজেই ক্রিয়েট করতে পারবেন। কিন্তু অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পরে আপনাকে আপনার প্রোফাইল এ দেখে খুব ভালো মনোযোগ দিতে হবে। কয়েকদিনের জন্য কম রেটে কাজ করে আপনি আপনার রেটিং বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বেশি রেটে কাজ করতে পারবেন।
এখন প্রশ্ন আসে এখন থেকে আপনি মাসে কত টাকা কামাতে পারবেন?
আসলে ভাই এটার কোন লিমিট নেই। হয়তোবা আপনি প্রথম বছর এক টাকাও ইনকাম করতে না পারেন কিন্তু দ্বিতীয় তৃতীয় বছর লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ ডিপেন্ড করে আপনার কাজের দক্ষতার উপর।
ইউটিউব

বর্তমানে ইউটিউব খুব জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। আপনি চাইলে খুব সহজেই এর থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, প্রথম প্রথম হাল ছেড়ে দিলে হবে না, আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে।
আপনি ইউটিউবে ইনকাম করবেন কিভাবে?
- ধরেন আপনি খুব ভালো ভিডিও বানাতে পারেন।
- আপনার ভিতরে কমেডি করার ট্যালেন্ট রয়েছে।
- আপনি খুব ভালো গান গাইতে পারেন।
- অথবা আপনি মানুষকে মোটিভেট করতে পারেন।
আপনার ভিতরে যদি এরকম আরো অনেক ট্যালেন্ট থাকে তাহলে আপনি আপনার ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড করে ধীরে ধীরে আপনার ভিউয়ারস বাড়লে। আপনি এখান থেকে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি এখান থেকে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন তার কোনো শেষ নেই। কিন্তু শর্ত হচ্ছে আপনাকে অনেক মেহনত করতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং হল, আপনি তো কোন না কোন সময় অনলাইন থেকে শপিং করেছেন
যেমন :- দারাজ, ইভ্যালি, অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, আলিবাবা ইত্যাদি থেকে। এই অনলাইন শপিং সাইট গুলোর পণ্যগুলোকে প্রমোট করা কেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।
ইনকাম কিভাবে করা যায়?
ধরেন আপনি অ্যামাজন থেকে একটি ল্যাপটপ কিনেছন তা অনেক দিন ব্যবহার করছেন এবং ল্যাপটপটি আপনার বন্ধুর পছন্দ হয়েছে সেও কিনতে চাচ্ছেন তখন যদি আপনার অ্যামাজনের এফিলিয়েটে অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে আপনি ওই প্রোডাক্ট এর লিংঙ্কটি আপনার বন্ধুকে শেয়ার করে দিলেন। যখন আপনার বন্ধু এটি ক্রয় করবেন তার থেকে আপনি কিছু বেনিফিট বা একটি নির্দিষ্ট কমিশন পাবেন। এটি এক ধরনের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া।
শেয়ার মার্কেট

শেয়ার মার্কেটিং কে আপনারা অনেকেই “জুয়া” মনে করেন। কিন্তু যার শেয়ার মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো নলেজ রয়েছে অথবা যে এই শেয়ার মার্কেটিং সম্পর্কে ভালভাবে স্টাডি করেছে তার কোটিপতি হতে বেশিদিন সময় লাগবে না। কিন্তু একথা সত্যি, আপনি যদি কোথাও ভুল করেন তাহলে কোটিপতি থেকে ফকির হতে বেশিদিন সময় লাগবে না। এর মধ্যে আপনার অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন এবং আপনার রিক্স নেওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকতে হবে। সুতরাং এ ধরনের অনলাইন বিজনেসে ইনভেষ্ট করার আগে ভালো করে ভেবে নিবেন।
ওয়েবসাইট

আপনি চাইলে খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এটা অনেক কষ্টের কোনো কাজ নয়। ওয়াডপ্রেস এগিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে আপনাকে কনটেন্ট লিখতে হবে। অর্থাৎ ব্লগিং করতে হবে। যখন আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে ভালোভাবে ট্রাফিক আসবে। তখন আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে গুগল এডসেন্স বসাতে পারেন। গুগল এডসেন্স বসালে গুগোল আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে অ্যাড দেখানো শুরু করবে। অ্যাড দেখানোর পরে, আপনার ওয়েবসাইটের যে ট্রাফিক হবে তারা যদি এডের মধ্যে ক্লিক করে সেই হিসেবে গুগল আপনাকে টাকা পেমেন্ট করবে। ধীরে ধীরে আপনার অনলাইন বিজনেস শুরু হয়ে গেলে ইনকামও শুরু হয়ে যাবে।