আল্লাহ তাআলা পানি হইতে ধূয়া এবং সেই ধূয়া হইতে ৭ আসমান সৃষ্টি করিলেন। তারপর সেই পানিতে ফেলা সৃষ্টি হইল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যে, সর্বপ্রথম কাবা গৃহের স্থানে ফেনা সৃষ্টি হইল। উহার পর সেই ফেনা বৃস্তিত হইতে শুরু করিল। ক্রমশ: সেই ফেনা পানির নিচে অনেক দূর পর্যন্ত জমাট বাধিল। সর্বপ্রথম কাবা শরীফের জমি জমাট হইল। তারপর সেই ফেনা জমিয়া মাটির রুপ ধারণ করিল। কিন্তু যেহেতু গভীর পানির উপর মাটি জমাট বাধিলো তাই উহা কাঁপিতে লাগিল। তখন আল্লাহ তাআলা জমিনকে স্থির করিবার জন্য পাহাড় সৃষ্টি করিলেন।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন :
আল্লাহুল্লাযী জাআলা লাকুমুল আরদা কারারান।
অর্থ, আল্লাহই এই জমিনকে তোমাদের জন্য স্থির করিয়াছেন। তাফসীরে মাদারেক শরীফে আছে এবং অন্যান্য কিতাবে লেখা আছে, জমিনের উপর আল্লাহতালা ২৯ টি বৃহৎ পর্বত সৃষ্টি করিয়াছেন। এবং এই গুলি দ্বারা জমিন স্থির এবং উহার ভারসাম্য বহাল রাখিয়াছেন। এত – দ্ব্যতীত আল্লাহ তাআলা এক অতি বড় ফেরেশতার হাতে সেই পর্বত সমূহ রক্ষণা-বেক্ষণের ভার দিয়াছেন এবং উহার শিরাগুলি সেই ফেরেশতার হাতে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা যখনই কোন জাতিকে তাহার নাফরমানীর বা গাফিলতির জন্য হুশিয়ার করিতে চাহেন তখনই সেই ফেরেশতাকে জমিনের শিরা ধরিয়া জোরে ধাক্কা দিতে আদেশ করেন, ফলে ভূমিকম্প হইয়া থাকে।
আল্লাহ তাআলা কেবল একটিই নয় এইরূপ সাতটি জমীন সৃষ্টি করিয়াছেন যেমন তিনি পবিত্র কুরআনে বলেছেন –
“আল্লাহূল্লাযী খালাকা সাবআ সামাওয়াতি। ওয়ামিনাল আরদি মিছলাহুন্না!”
অর্থ : এবং আল্লাহই সাতটি আসমান সৃষ্টি করিয়াছেন এবং আরো এরূপ আল্লাহরই সৃষ্টি পৃথিবী রহিয়াছে।
কিতাবে লেখা আছে, পৃথিবী হইতে আকাশ ৫ শত বছরের রাস্তা। কিতাবে আরো লিখা আছে, আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাহার কুদরতের কলম এবং লওহ মাহফুজের প্রতীক খেতাব করিয়া বলিলেন: ‘লেখ’। আল্লাহর হুকুমের ভয়ে কলমটি ফাটিয়া গেল। কলম কম্পিতভাবে জিজ্ঞাসা করিল – হে প্রভু! কি লিখতে আদেশ করেন?
আল্লাহ তা’আলা বলিলেন : “মাখলুকের তাকদীর লিখ।” কলম সেই হইতে লওহ মাহফুজে মাখলুকের তাকদীর লিখিতে রহিয়াছে।