মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। তার সম্মান ও সবার থেকে বেশি। এই মর্যাদা সঠিক রাখার জন্য ইসলাম ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার ক্ষেত্রে চারটি বিধি নিষেধ আরোপ করেছে।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ৪ টি বিধি নিষেধ
- ছোটরা বড়দের রুমে প্রবেশের আগে অনুমতি চাইতে হবে।
- অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ নিষিদ্ধ
- গুপ্তচরবৃত্তি নিষিদ্ধ
- অন্যের দোষ চর্চা নিষিদ্ধ
ছোটরা বড়দের রুমে প্রবেশের আগে অনুমতি চাইতে হবে।

ছোটরা বড়দের রুমে প্রবেশ করার আগে অনুমতি চাইতে হবে। যদি কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের রুমে প্রবেশ করতে চায় তাহলে তাকে তিনবার অনুমতি নিতে হবে তাই স্পষ্ট ভাবে পবিত্র কোরআনে রয়েছে।
এরশাদ হয়েছে, হে মুমিনরা! তোমাদের দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে। তা হল, ফজরের আগে দুপুরে যখন তোমরা পোশাক খুলে রাখ এবং এশার পর এই তিন সময় গোপনীয়তার সময় যে সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্য কোন দোষ নেই তোমাদের একে অন্যের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয় এভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াত বিবৃতি করেন আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা: নূর, আয়াত নং. ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ নিষিদ্ধ

কখনো অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়। তার অনুমতি পেতে যত সময়ই লাগুক না কেন! এ বিষয় পবিত্র কুরআনে এসেছে ‘হে মমিনরা, তোমরা নিজেদের গৃহছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের ছালাম না দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। ( সূরা : নুর, আয়াত :২৭)।
অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ নিষেধ এর ছোট্ট একটি ঘটনা
যদি কারো দরজায় আঘাত করে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরেও সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাঈদ খুদরী রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) ওমর (রা.) আনহুর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোন অনুমতি পাননি, ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু পরে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি ফিরে গেলে কেন? তিনি জবাব দেন, আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য অনুমতি চেয়ে ছিলাম যেমনটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে শিখিয়েছেন কিন্তু আপনি কোন অনুমতি দেননি তাই আমি প্রবেশ করে নি।
গুপ্তচরবৃত্তি নিষিদ্ধ

কখনোই কারোর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা উচিত নয়। হোক সে স্বামী-স্ত্রী ভাই বোন বা অন্য কেউ এবং কারো উপর গুপ্তচরবৃত্তিও নিষিদ্ধ। এরশাদ হয়েছে, হে মমিন যা অধিকাংশ অনুমান থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয়ই কতক ধারণা গুনাহ। এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করনা। (সূরা : হুজুরাত, আয়াত নং. ১২)
অন্যের দোষ চর্চা নিষিদ্ধ

পরনিন্দা বা দোষচর্চা সমাজের সম্পর্কহীনতা ও হানাহানি পরিবেশ তৈরি করে। এর মাধ্যমে অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের এই ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত থাকতে আদেশ করেছেন। এরশাদ হয়েছে, তোমাদের কেউ যেন কখনো কারও পশ্চাতে নিন্দা করে না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি নিজের আপন মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই করো। (সূরা : হূজুরাত, আয়াত,১২)।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই পোস্টে থাকা চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুক।