কলা আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ফুড। এর উপকারী গুণ এর কথা তো বলে শেষ করা যাবেনা। চলুন তারপরেও যতটুকু না বললেই নয়।
কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও ফাইবার। আর এই কলাকে আমরা সবাই সুপার ফুড বলে থাকি।
আমরা সবাই অনেকেই বিভিন্ন দামি দামি ফলের দিকে ঝুকি। কারণ, আমরা মনে করি দামি ফলের ভিতরে বেশি ভিটামিন বেশি পুষ্টি ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা জানি না যে কলা বহুগুণে সমৃদ্ধি। বেশি টাকা খরচ করে বিদেশি ফল ফ্রুট না খেয়ে আমাদের দেশী কলা খাওয়াই অনেক ভালো।
কলা একটি পুষ্টিকর খাবার কারণের মধ্যে রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। কল আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি দেহের অনেক ইন্দ্রিয়কে সজীব রাখতেও সাহায্য করে। তাই কলার কোন জুড়ি নেই। আমরা প্রতিদিন আমাদের সকালে খাবার রুটিনে এবং রাতে খাবারের রুটিনে নিশ্চিন্তে কলা রাখতে পারি।
কলা খাওয়ার উপকারিতাগুলো
- হৃদযন্ত্র ভালো রাখে
- কিডনি সুস্থ রাখে
- শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে
- হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
- মানসিক চাপ কমায়
- ত্বক সজীব করে
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়াতে সাহায্য করে
- হজম সমস্যা সমাধান করে
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
- পানির চাহিদা পূরণ করে
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে
পাকা কলা পটাশিয়ামই ভরপুর। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য খুবই ভালো। প্রতিদিন দুইটি বা একটি কলা খেলে আপনার হৃদযন্ত্র থেকে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা কমবে।
যেমন:- হার্ড অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে।
কিডনি সুস্থ রাখে
কলাতে থাকা পটাশিয়াম কিডনি সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কলাতে থাকা পটাশিয়াম ইউরিনে ক্যালসিয়াম জমা হতে বাধা দেয়। তাই কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্নভাবে কিডনিকে সুস্থ রাখতে কলার ভূমিকা বলে শেষ করার মত না।
শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে
আপনার শরীর কি রোগা? শরীরে শক্তি কম পাচ্ছেন? তাহলে অবশ্যই কলা সেবন করুন। কারণ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও সল্যুভল ফাইবার যা শরীরে শক্তি যোগান দিতে সাহায্য করে। এর কারণেই দেখবেন খেলোয়াড়রা প্রায়ই ফিল্ডে নামার আগে কলা খেয়ে নেয়।
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
আমরা প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের তেল জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি। তেল জাতীয় খাবার খেলে আমাদের বদহজম সৃষ্টি হয়, যখনই দেখবেন এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তখনই একটা দুইটা কলা খেয়ে নেবেন। কারণ কলাতে রয়েছে ফাইবার ও প্রোবায়োটিক অলিগোস্যাকারাইজড যা হজম করতে দারুণ ভাবে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬, এই ভিটামিন বি৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড সৃষ্টি করে, রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে এবং হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কলার উপকারিতা এর মধ্যে একটি বিশেষ উপকারিতা হলো এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কারণ, পাকা কলাতে রয়েছে TNF -A নামক এক ধরনের যৌগ যা শরীরের শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এতে করে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
মানসিক চাপ কমায়
কলার বিশেষ কিছু উপকারী তার মধ্যে একটি বিশেষ উপকারিতা হচ্ছে এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড যা সেরোটোনিনের পরিবর্তিত হয়। আর শরীরে সেরোটোনিনের যদি সঠিক থাকে তাহলে আপনার মন ভালো থাকবে মানসিক চাপ কমবে।
বর্তমানে আমাদের দেশে ৭৫% মানুষই কমবেশি মানসিক চাপ যুক্ত থাকে। আর কলা মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। তাহলে এখন থেকে নিয়মিত কলা খেলে মানসিক চাপ দূর হবে ভালোভাবে ঘুমাতে পারবেন।
ত্বক সজীব করে
কলার উপকারিতা এতক্ষণ পড়লেন কলা যেমন উপকারিতা তেমনি করে কলার চমড়ায়ও রয়েছে বিশেষ গুন। কলার চামড়ায় রয়েছে ফ্যাটি উপাদান যা ত্বকে ঘষলে মশ্চারাইজার এর মত উপকার করে। ব্রণ দূর করার জন্য কলার ছাল ঘষার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেকেই।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়াতে সাহায্য করে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সার্বিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। কলা এন্টিঅক্সিডেন্ট দিয়ে ভরপুর তাই আমরা নিয়মিত কলা খাওয়ার চেষ্টা করব।
হজম সমস্যা সমাধান করে
হজম সমস্যা সমাধান করার জন্য কলা সেবন করা খুবই জরুরী। কারণ আয়ুর্বেদের শাস্ত্র অনুযায়ী কলা হজম সমস্যা সমাধান করে। তাই ফরমালিন মুক্ত কলা সেবন করার চেষ্টা করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
কলা ওজন নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। যাদের ওজন অনেক বেশি তারা এটি চেষ্টা করে দেখতে পারেন কারণ এটি পরীক্ষিত, যে করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। কলার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম ও ফাইবার যা অনেকক্ষণ পেট ভরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে খাওয়ার পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে। এভাবেই আপনি আপনার ওজন খুব সহজে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন কলা খেয়ে।
পানির চাহিদা পূরণ করে
কলা এমন একটি ফল যা একসাথে শরীরের দুটি ঘাটতি পূরণ করে। এক হচ্ছে ক্ষুধা নিবারণ হয় আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে পানির চাহিদা পূরণ হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
কলা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের মতন কঠিন রোগের ও সমস্যার সমাধান দিতে পারে। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই কলা খেয়ে দেখতে পারেন।
Note. উপরোক্ত কোন সমস্যা যদি আপনার থাকে তাহলে অবশ্যই প্রথমে কলা খেয়ে দেখুন যদি কাজ না হয় তাহলে ভালো কোনো ডাক্তার পরামর্শ নিন। তার পাশে পাশে কলাকেও কন্টিনিউ রেখে যান। ইনশাআল্লাহ আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
করলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি?
করলা খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে একটা পোষ্ট চাই মারুফ ভাই।
দুধ আর কলা একসাথে খেলে হজমে কোন সমস্যা হবে কি?
না তেমন কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। কিন্তু অনেকের এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
আবার অনেকের কোষ্টকাঠিন্ন ও হতে পারে। তবে পর্যাপ্ত পরিমান পানি খেলে এই ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা না।
তবে দুধ আর কলা দিয়ে খাওয়ার স্বাধ ভুলার নয়।
অবশ্যই অভিজ্ঞতা না থাকলে নেয়া উচিৎ।