ইখলাস কি
সাধারণত ইখলাস শব্দের শাব্দিক অর্থ নিয়্যতকে সহীহ করা, এবং আল্লাহকে খুশি করা ও তার সন্তুষ্টি অর্জন করা।
কোন কাজ শুরু করার আগে সেই কাজটা কি ভাবে করতে হবে কিভাবে করলে ভালো হবে সেই জন্য পরিকল্পনা করতে হয় এবং নিয়্যত করতে হয়। যেকোন ভালো কাজেই যদি আমি নিয়্যতকে বিশুদ্ধ রেখে করি তাহলে ওই কাজে অনেক ফায়দা আছে। নিয়্যতের মধ্যে কাজে বরকত আসে। যেমনঃ কেউ দোকানে ১ লক্ষ টাকার মাল ক্রয় করলো এবং নিয়্যত করলো সে এখান থেকে অনেক মুনাফা পাবে। আরেক ব্যক্তি ১লক্ষ টাকার মাল ক্রয় করলো ঠিক কিন্তু নিয়্যত করলো অল্প লাভেই পন্য বিক্রি করবে।
এখানে, ২ ব্যক্তির ২ রকম নিয়্যত, এখন যে ভালো নিয়্যত করছে সে অবশ্যই ভালো ফল পাবে। আর যার নিয়্যতের মধ্যেই গড়মিল রয়েছে সে তো আর ভালো ফল পাবে না। কারণ তার ইখলাস / নিয়্যত সহীহ ছিলো না। তাই যেকোনো কাজেই হোক না কেনো ছোট হোক অথবা বড় হোক সব কাজের আগেই আমার ইখলাস / নিয়্যতকে বিশুদ্ধ করা চাই। নিয়্যতকে বিশুদ্ধ রেখে কাজ করলে কাজে বরকত আসেবেই ইনশাআল্লাহ।
ইখলাস কেনো করা দরকার
যেহেতু আমরা জানি, ইখলাস মানে নিয়্যতকে বিশুদ্ধ করা। তাই আমাদের প্রতিটি কাজ প্রতিটি বিষয়ই ইখলাস নিয়ে করতে হবে। আরেকটা উদাহরণস্বরূপ এরকম যেমন – আত্মাকে পবিত্র করার। জন্য যেমন ১০ টা সু- স্বভাব মেহনত করে মনের মধ্যে অর্জন করতে হয়, আর ১০ কু স্বভাবের আগাছা মেহনত করে মনের ক্ষেত থেকে সাফ করতে হয়। ইখলাস হলো যে ১০ টা সু-স্বভাবের ফসল মনের ক্ষেতের মধ্যে ফলাতে হয় এই ১০ টা ফসলের একটি ফসল।
আবারো বলি, ইখলাস হলো সহীহ নিয়্যত করা। প্রতিটি কাজ যেনো আমার রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই হয়। যেই কাজ যেভাবে করলে আল্লাহ খুশি থাকে সেই কাজ সেভাবেই করা।
যেমনঃ আমরা নামাজ পড়ি আমাদের নামাজ যেনো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই হয়। আমাদের রোজা যেনো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই হয়। তেমনি ভাবে আমাদের হজ্জ, যাকাত, দান খয়রাত, যিকির করা, তাসবীহ পড়া, অসুস্থদের পাশে দাড়ানো, প্রতিবেশির খোঁজ খবর নেওয়া অসহায় গরীব দুঃখীদের পাশে দাড়ানো ইত্যাদি সব যেনো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি। অন্য কাউকে দেখানোর জন্য না। আর এটার নামই হলো ইখলাস।
আর আপনি নামাজ পড়েন, যিকির করেন, তাসবীহ পড়েন, যাকাত দেন, দান খয়রাত করেন ইত্যাদি এর দ্বারা যদি সাধারণ মানুষের কোন কষ্ট হয়, আথবা লোক দেখানোর জন্য হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয় না। তাহলে বুঝে রাখেন ওই কাজগুলোর মধ্যে আপনার ইখলাস নাই। ওই কাজগুলো আপনার রিয়া হয়ে গেলো। মানে লোক দেখানো হয়ে গেলো। তাই আমাদের সব কাজ যেনো ইখলাসের/ নিয়্যতকে বিশুদ্ধ রেখে এবং আল্লহকে রাজি খুশি করার জন্যই হয়। তাহলে ওই কাজের মধ্যে বরকত হবে আল্লাহর সাহায্য আসবে।
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যেকোন কাজই হোকা না ছোট থেকে ছোট, বড় থেকে বড়, সব কিছু ইখালসের সাথে এবং আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্যই করা।
আল্লাহ আমাকে এবং আমাদের সবাইকে নিয়্যতকে সহীহ রেখে সব ভালো কাজ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।