এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নিয়ে সবারই কনফিউজ। বর্তমান চাকরির বাজারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের খুব ভালো ডিমান্ড। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন মূলত নির্ভর করে তার অভিজ্ঞতার উপরে। অভিজ্ঞতা যদি কম হয় তাহলে বেতন কম, অভিজ্ঞতা যদি বেশি হয় তাহলে বেতন বেশি। আবারো দেশের উপরে অনেকটা ভিত্তি করে। একেক দেশে একেক রকম বেতন পায় ইঞ্জিনিয়াররা।
বর্তমান পড়াশোনার পেক্ষাপটে বিভিন্ন লাইনে ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়। যেমনঃ- ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক সেক্টর হওয়ার কারণে বিভিন্ন সেক্টরে ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক কোন সেক্টরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বেতন কত?
ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন স্কেল
- ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
- মেরিন ইঞ্জিনিয়ার
- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার
- আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ার
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর ব্যাপক চাহিদা। দেশ ইলেকট্রিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের পরিমাণ খুবই কম। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা সুধু পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজের মধ্যেই নয় বরং আরও বিভিন্ন কাজ। যেমন ইলেকট্রিক্যাল এর সাথে জড়িত বিভিন্ন কাজ। যেমন কম্পিউটার, রাডার ইত্যাদিতে কাজ করছে।
একজন দক্ষ ও সৎ মেধাবী ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর ব্যাপক চাহিদা আমাদের দেশে। কিন্তু ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নির্ভর করে তার অভিজ্ঞতার উপরে। তাছাড়াও বর্তমানে ডিপ্লোমা হোল্ডার যারা রয়েছেন তাদের বেতনের স্কেল শুরু হয় ১৫ হাজার টাকা থেকে। আর যারা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন তাদের ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪-৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে নিজের অভিজ্ঞতার এবং কর্ম দক্ষতার ওপর।
ইলেকট্রিক্যাল কাজের চাহিদা অনেক বেশি কিন্তু সব ধরনের ছাত্ররা ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে না। তাই ইলেকট্রিক্যাল সাবজেক্ট নিয়ে পড়ার আগে একটু বিবেক বিবেচনা করে আগে সাবজেক্টকে যাচাই করে তারপর বাছাই করলে ভালো হয়।
Note. প্রত্যেকটি সাবজেক্টে তার নিজের জায়গা থেকে ঠিক আছে। কিন্তু আমরা সবাই সাবজেক্ট বাছাই করার আগে সাবজেক্টকে নিয়ে যাচাই বাছাই করবো যে এই সাবজেক্টি কি আমার জন্য পারফেক্ট।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার
জাহাজের মধ্যে যারা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করে তারাই হচ্ছে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। যাদের ঘুরাঘুরির অনেক শখ সাধারণত এমন ব্যক্তিরা এই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। কিন্তু মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর ভবিষ্যৎ বেশ ভালো। সাগর পাড়ি দেওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সুযোগ হয়ে যায়।
সাধারণত মেরিন ইঞ্জিনিয়ার দুইভাবে হওয়া যায়। ডিপ্লোমা হোল্ডার এবং বিএসসি হোল্ডার। প্রায় সমস্ত চাকরির ক্ষেত্রেই ডিপ্লোমা হোল্ডারদের থেকে বিএসসি হোল্ডারদের প্রায়োরিটি বেশি দেওয়া হয়। আর তার পাশাপাশি অবশ্যই অভিজ্ঞতা অনেক ম্যাটার করে। সাধারণত মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের এন্ট্রি লেভেলের বেতন হয় ১৭,০০০৳ – ২০,০০০৳ কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই ।কিন্তু যদি অভিজ্ঞ হয় তাহলে বেতন তার অভিজ্ঞতার উপরে নির্ভর করে।
সাধারণত যারা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় তাদের সমুদ্র বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান এবং জাহাজ চালানো ও মেরামত সমুদ্র আইন ইত্যাদি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা চাকরির আগেই নেওয়া দরকার।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার
আমরা বাংলাদেশে থাকি। কিন্তু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে জানি না এটা তো হতেই পারে না। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা সবাই গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে। একটি গার্মেন্টসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারে দায়িত্ব অনেক। বাংলাদেশে বর্তমানে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের অনেক প্রয়োজন। আবারো আগের কথাই বলছি দক্ষ লোকের কদর সবখানেই বেশি। আর দক্ষ লোকের চাহিদা ও বেশি কিন্তু দক্ষ লোক খুব কম এটা মূলত সব সেক্টরেই হয়ে থাকে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন শুরুতেই ১৫০০০৳ হয়। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন এর শেষ নেই। এটা মূলত দক্ষতার উপর নির্ভর করে দক্ষতা যার যত বেশি তার বেতন ও তত বেশি। দেখা যায় কোন কোন কোম্পানিতে ৭ লক্ষ টাকা দিয়েও ভালো ইঞ্জিনিয়ার রাখে। আবার কোন কোন কোম্পানিতে এর থেকেও বেশি দিয়ে রাখে। তাই বললাম দক্ষতা যার যত বেশি তার কদর তত বেশি।
আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ার
আর্কিটেকচার অর্থ হচ্ছে স্থাপত্যবিদ্যা। স্থাপত্য অর্থ হচ্ছে নির্মাণ কৌশল। সাধারণত একজন আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভিতরে নির্মাণকৌশল খুব ভালো থাকে। বাড়ি ঘর শহর ইত্যাদি কিভাবে ভালোভাবে নির্মাণ করা যায় এই কৌশল একজন আর্কিটেকচার খুব ভালো বোঝে।
আর বর্তমানে বাংলাদেশে আর্কিটেকচার এর চাহিদা অনেক বেশি। বহুতল ভবন করতে গেলেই আর্কিটেকচার এর প্রয়োজন হয়। সাধারণত একজন আর্কিটেকচার এর বেতন ২৫ হাজার থেকে শুরু হয় শেষটা মূলত নির্ভর করে অভিজ্ঞতার উপর।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রের মধ্যে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্র অন্যতম। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাধারণত যন্ত্রপ্রকৌশলী হয়। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাধারণত ছোট ছোট যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে বড় বড় যন্ত্রাংশ তৈরি করে। পৃথিবীর মধ্যে যত যন্ত্রাংশ আছে তা প্রায় সবই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা তৈরি।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা যখন চাকরিতে ঢুকে প্রথম অবস্থায় ৩০,০০০৳ আর সম্পূর্ণটাই মূলত অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর অবশ্যই যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।